১.
বয়স আমার তখন চার কি সাড়ে তিন। এর বেশি হবে না।রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল।গভীর রাত এটা বুঝার বয়স তখন না। তখন অন্ধকার মানেই রাত বুঝতাম।বিছানাটা নড়ছে, ক্যাচ ক্যাচ একটা শব্দ। তার কিছুক্ষণ পর মনে হল ঘন ঘন নিশ্বাসের শব্দ কানে আসছে।আমি প্রথমে আশপাশের মশারি, বালিশ, আমার কোল বালিশ এগুলো ধরে সচেতন হতে চেষ্টা করছি। আর বুঝার চেষ্টা করছি শব্দগুলো কোথা থেকে আসছে। আমার মনে হতে লাগলো শব্দটা আব্বা-আম্মা করছে। আচ্ছা বলতে ভুলে গেছি আমি আব্বা-আম্মার সাথে ঘুমাতাম। একমাএ সন্তান ছিলাম। তার উপর আমার আগের সন্তান, ছেলে নাকি মেয়ে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্তা অবস্থায় আমার আব্বা-আম্মাকে হারাতে হয়। তাই সব সময় কাছে কাছে রাখতো। রাতেও নিজেদের বিছানায় নিয়ে ঘুমাতো।
প্রথমে নিশ্বাস শুনলেও একটু পরে আমি তাদের অবয়ব দেখতে পেলাম।তারা দুজন মানুষ কেমন করে যেন একজন মানুষ হয়ে গেছে।আমি ঠিক বুঝলাম না কি হচ্ছে!কৌতুহলী মনে জানার জন্য চুপ করে শুয়ে থাকলাম। একটা সময় ঘুম এসে গেলো আর আমি সকালে সব ভুলেও গেলাম।
আমি সব ভুলে যাই।এই যে কোথায় নিচের গেটের চাবি রাখি তা মনে থাকে না। কোন বইটা পড়ছিলাম তা মনে থাকে না। আবার আমি কি আজ গোসল করেছি কিনা সেটাও ভুলে যাই! এসব মনে করার জন্য আমি কিছু কৌশল অবলম্বন করি। যেমন চাবি সব সময় দরজার সাথে লাগানো আঙটার সাথে ঝুলিয়ে রাখ। বই সব গুলো সেলফে রাখি, যেটা পড়ি সেটা বিছানায় রাখি। গোসল করেছি কিনা সেটা বুঝার জন্য ছাদে বা বারান্দায় কাপড় আছে কিনা সেটা দেখি।এগুলো নিয়েই আমার ভুলে যাওয়া জীবন।
তখন চার কি সাড়ে তিন বছর বয়সে আমি রাতের রহস্যটা ভুলতে চাইনি কিন্তু সকালে ভুলে গেলাম।এটা মনে গেঁথে গেছে বা চেষ্টা করেও ভুলতে পারি নাই অন্য কারণে। কারণটাও আমার মনে আছে বেমালুম। আমার আব্বা চট্টগ্রাম শহরে একটা চাকরী করতেন। তিনি সপ্তাহ শেষে শুক্রবার বাড়ি আসতেন। কিন্তু সেই বিছানা নড়ার শব্দ, ঘন ঘন নিশ্বাস আমি শুনতে পেতাম আব্বা শহরে থাকলেও। আব্বা ছাড়া সেই পুরুষ মানুষকে আমি চিনি না, কখনো চিনতে পারিও নাই। অন্ধকারে সেই অবয়বের ছায়া দেখতে পেতাম। তার সাথে আম্মার কোন কথা হতো না। কিন্তু হিংস্র সঙ্গমের ঘন ঘন নিশ্বাস। দুজন মানুষ একজন হয়ে যাওয়া অথবা আমার মায়ের স্তন সে ছোট বাচ্চার মত মুখে নেওয়া আমি দেখতে পেতাম ছায়াতে।আমার মনে হিংসা হতো। আমি তো আর আম্মার দুধ খেতে পারি না, কিন্তু পুরুষটা অবলীলায় স্তন মুখে নিচ্ছে আর আম্মার মুখ থেকে বের হওয়া সেই ঘন নিশ্বাসে ছিল একটা পৈশাচিক আনন্দ। পুরুষটা দুজন মানুষ একজন হওয়ার ছায়াটা তৈরি করতো। আর পুরো বিছানা কাঁপিয়ে তুলতো। যা আমার বাবা করতো না। সে বাড়ি আসলে আমি দীর্ঘ ঘুম দিতে পারতাম।
যেটা বলছিলাম চার বা সাড়ে চার বছর বয়সের সেই শব্দগুলো, ঘন ঘন নিশ্বাস’টা আমি কখনো ভুলি নাই। সে শব্দের প্রতি আমার একটা আর্কষণ হতে থাকে। আমি নিজে নিজে সে রকম করে শব্দ করি।আমার কাছে ভালো লাগতে শুরু করে।কিন্তু দুজন মানুষের একজন হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে অজানা থেকে যায়। এটা জানার জন্য আমার বয়স এগারো হতে হয়। একদিন এক বান্ধবী আমাকে বলে দুজন মানুষ একজন হয়ে যাওয়ার কথা। সে আমাকে শারীরিক সম্পর্কের কথা জানায়। কেমন করে যেন ভিডিওতে সে দেখেছে তার বড় ভাইয়ের মোবাইলে। সবটুকু আমাকে সে বলে। পুরোপুরি গল্পের মত করে।আমার তো এটাও মনে আছে। কিন্তু আমার অনেক কিছু মনে থাকে না।আমি ছোট বেলায় চার বা পাঁচ বছর বয়সে আমাদের গ্রামের মক্তবে আরবি পড়তে যেতাম।আমি যাদের সাথে যেতাম,তাদের মধ্যে সবার ছোট ছিলাম।তাই আস্তে আস্তে হাটতাম।সবাই আমাকে রেখে আগে আগে চলে যেতো। সেই গ্রামের বাঁশ ঝাড়। পুকুর পাড়ের রাস্তা। সবুজ ধান ক্ষেত। মাটির রাস্তা সবই মনে আছে আমার। আরো মনে আছে আমরা সবাই শীতল পাটিতে নিচে বসতাম। আমাদের কোন চেয়ার টেবিল ছিল না। কিন্তু আমার মক্তবের কোন সহপাঠীকে মনে পড়ে না।আমার মনে পড়ে না কোন মাখরাজ বা হাদিসও।আমি সবই ভুলে গেছি। কিন্তু সবুজ রংয়ের সেই হাদিসের বইটা এখনো আমার কাছে আছে।আছে সেই লাল মলাটের কোরআন শরীফটাও। আমার আম্মা সেটা এখনো পড়ে। সে এটাকে নতুন মলাটে বাঁধাই করেছে। একটা সাদা নামাযের কাপড় পরে আম্মা সুরেলা কন্ঠে কুরআন পড়ে। কুরআনের অভেদ্য আরবি শব্দ শুনে আমার ঘুম ভাঙ্গে। তাও আমি শুয়ে থাকি ঘুমের ভান করে। আম্মা কাছে এসে ডাক না দেওয়া পর্যন্ত। আম্মার রুমে একটা ছোট চৌকি আছে, সেটাতে আম্মা শুধু নামায বা কুরআন পড়ে। অন্য কারো সেটাতে বসা নিষেধ। এমনকি তার একমাত্র সন্তান মানে আমারও। ও আমি তো আমার নাম বলতে ভুলে গেছি। আমার নাম শরৎ। শরৎকালে আমার জন্ম না। আমার আব্বার প্রিয় ঋতু শরৎ তাই আমার এই নাম রাখা হয়।
২.
আমার শরৎ নামটা নিয়ে আমার সব সময় বিরম্বনায় পড়তে হয়। ছেলের নাম বলে কেউ শরৎচন্দ্রের কথা বলে। কেউবা অন্যভাবে উপহাস করে। আমি ক্লাসিকাল উপন্যাস পড়ি না।আমার কাছে বিরক্ত লাগে। তাই শরতের লেখা সম্পর্কে জানা নাই। সবাই তার বই পড়ার উপদেশ দেয় আমাকে। কারা যেন দেয় তা এ মুহূর্তে মনে আসছে না। আমি মানুষের নাম ভুলে যাই। চেহারা মনে থাকে তার। চেহারা দিয়ে নাম মনে করার চেষ্টা করি। মনে মনে চেহারার উপর কপালে নাম লিখে রাখি, তাও ভুলে যাই। লেখা ভালো না। নিজেই নিজের লেখা বুঝি না। তখন মনে মনে তার চেহারার লেখাকে হিব্রু ভাষায় লেখা কঠিন ও অভেদ্য আইন বা নিয়ম কানুন মনে হয়।
আম্মা তার রুম থেকে আমার রুমে আসে। জানালার পর্দা সরাতে সরাতে ডাকে, “শরৎ! শরৎ! তাড়াতাড়ি উঠ। নামায-কালাম নাই, রাতে দেরী করে শোয়। আর সকালে পড়ে পড়ে ঘুমায়”। আমি একটু নড়াচড়া করে আবার অন্যপাশ ফিরে শুয়ে থাকি। আম্মা আমার টেবিল গোছায়। জামাকাপড় ইস্ত্রি করে। জামাকাপড় গুছিয়ে আলমারিতে রাখে। বিকালে বাইরে থেকে জামাকাপড় আনলেও আমি ভাজ করি না। আম্মা সকালে ভাজ করে রাখে। আমি তারপরেও উঠি না। শুয়ে থাকি। আম্মা ফ্যান অফ করে নাস্তা বানাতে চলে যায়। আমি গরমে বাধ্য সন্তানের মত উঠে পড়ি।
আচ্ছা যা বলছিলাম আমার চার কি সাড়ে তিন বছরের সেই শব্দের রহস্য জানার পর থেকে আমার খুব শখ হলো শারীরিক সম্পর্ক করার। আমি কখনো কোন পর্ণ দেখি নাই। আমি কখনো কোন চটি পড়ি নাই। আমার একমাত্র সম্বল বান্ধবীর বলা সেই ভিডিও দেখার রসালো গল্প। আচ্ছা! তাহলে পর্ণ বা চটি এগুলো কিভাবে জেনেছিলাম। সেটাও এখন মনে আসছে না। মনে আসলে বলবো।
আমি একটা ছেলে বন্ধু মনে মনে কল্পনা করতে থাকলাম। যে আমাকে দুজন মানুষকে একজন মানুষ আর ঘনঘন নিশ্বাসের আনন্দ দিতে পারবে। চুপচাপ শান্ত আমার এই আকাঙ্খা কখনো কেউ জানলো না। শুনলো না আমার চার কি সাড়ে তিন বছর বয়স থেকে কল্পিত সেই শব্দের প্রতিধ্বনি। আমি আমার আকাঙ্খাটা ভুলি না। আমি ভুলি না আমার প্রথম দুজন মানুষ একজন মানুষ হয়ে যাওয়াটাও। অথচ আমি ভুলতে চাই। আমি ভুলতে চাই সেই মরীচিকাময় প্রলোভিত স্বপ্নের মিলন। আমি ভুলতে চাই আমাকে প্রথম চুম্বনের শিহরণ। আমি ভুলতে পারি না। আমি ভুলতে চেষ্টা করি। অথচ আমি ভুলে যাই নিচের গেটের চাবি কোথায়! কোন বইটা পড়ছিলাম! আজকে কি গোসল করেছি?
পর্ণ আর চটির কথা বলছিলাম ।এগুলো সম্পর্কে প্রথমে জানি বান্ধবীদের কাছে। কিন্তু ভিডিও দেখা আমার সম্ভব ছিল না। আম্মা সব সময় পাশে পাশে থাকে। আমার ভিডিওর প্রতি আগ্রহ হলো না। আমি পড়তে ভালোবাসি।একদিন আবু করিম নামে এক লেখকের একটা বই স্কুলের লাইব্রেরীতে পেলাম। সুন্দর একটা স্টেশন আর একটা ছেলের ছবি দিয়ে বইয়ের প্রচ্ছদটা করা। আমার দেখে খুব লোভ হলো। তখন আমি অষ্টম শ্রেণীতে পড়ি।বইয়ের ভিতরে একটা ছেলের জীবনে কিভাবে কতজন নারীর সাথে সঙ্গম করেছে তার বর্ণনা দেওয়া ছিল। আসলে আমার বইয়ের নামটা মনে আসছে না। আমি ভুলেই গেলাম। আমার তো মনে আছে প্রেমিকের সাথে প্রথম পরিচয়।তখন আমার পরিবার সহ আমরা ঢাকা শহরে থাকি।
৩.
ছেলেটার সাথে প্রথম পরিচয় শিরিন ম্যাডামের বাসার নিচে। আমি তখন ইন্টামিডিয়েটে পড়ি। ছেলেটা নিচে চায়ের দোকানে আড্ডা দেয়।ম্যাডামের বাসায় পড়তে যেতে আসতে দেখা হতো। তার মায়াবি চাহনি।বন্ধুদের সাথে উচ্ছাস বা সিগারেট খাওয়া। সবকিছু আমার ভালো লাগতো।আম্মা সাথে থাকতো। ইচ্ছা হলেও কথা বলা যেতো না। কিছুদিন পর একবার আম্মা অসুস্থ।আমি একা বাসায় ফিরছিলাম। রিক্সা ঠিক করতে যাই। কিন্তু কেউ যাবে না।তখন ছেলেটা এক রিক্সাওয়ালাকে বলে, “আরে মামা নিয়া যাও,মেয়েটা কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবে?”আমি রিক্সায় করে বাসায় ফিরি।পরের কয়েকদিন আম্মা ছিলো না সাথে,ছেলেটা আমার নাম জিজ্ঞেস করে। কথা হয়। সে তার নাম জানায় সুমন। ফেইসবুক আইডি দেওয়া নেওয়া হয়। আমরা প্রচুর কথা বলতাম বা চ্যাটিং করতাম। দেখা হতো ম্যাডামের বাসার নিচে রিক্সা নেওয়ার কয়েক মিনিট। আমার থেকে চার বছরের বড়। আনার্সে পড়ে। একটা সময় তাকে আমার মনে হতে থাকে দুজন মানুষ একজন মানুষ হওয়ার সঙ্গী। সে রাজি ছিল না। আমি তাকে জোর করে রাজী করাই। আমার তো বাসা থেকে একা বের হওয়া হয় না। তাই ঘুরতে যাওয়াও হয় না। আমি ঠিক করি কলেজ পালাবো। আমার কলেজের ছোট গেট দিয়ে ড্রেস পরে বের হওয়া সম্ভব ছিল না। আমি তাই ব্যাগে এক্সট্রা ড্রেস নিয়ে আসলাম। আম্মা আমাকে সকালে কলেজে দিয়ে গেলো। আমি ওয়াশরুম থেকে ড্রেস চেঞ্জ করে বের হয়ে গেলাম গেট দিয়ে। দারোয়ান জিজ্ঞেস করেছিলো, আমি কলেজে কেন এসেছি?
আমি বলেছিলাম, “সার্টিফিকেট তুলতে”। বলে বের হয়ে গেলাম। বাইরে সুমন দাড়িয়ে ছিল। ওর গায়ে নীল চেকের একটা শার্ট। রাস্তা পার হয়ে যখন আমার কাছে আসছিল আমার কাছে সুমনকে সিনেমার নায়ক মনে হচ্ছিলো। আমরা একটা রিক্সায় উঠলাম। সকালে ৮টা বাজে তখন। অফিস যাওয়ার জন্য কিছু মানুষের ব্যস্ততা। কর্মচঞ্চল পরিবেশের মাঝে আমি যে আমার প্রাণ পুরুষের পাশে বসে আছি। আমার উচ্ছ্বাস কেউ দেখেনি সেদিন। এমন কি সুমন নিজেও বুঝতে পারে নি আমি কতটা উচ্ছ্বাসিত।রিক্সায় উঠার পর আমরা একে অপরের হাত ধরলাম।আমি নিজেই রিক্সার হুটের নিচে সুমনের গালে একটা কিস করলাম,একটু পর ও আমার গালে একটা কিস।এভাবে কখন যে আমি ওর ঠোঁটে কিস করার ইচ্ছা আর হঠাৎ প্রথম দেখায় রিক্সায় বসে তা করে ফেলার মত সাহস দেখাবো তা সুমন বুঝতে পারেনি। সে ইতস্ততবোধ করলেও আমার মনে লালিত আকাঙ্খাকে সে রুখতে পারেনি। সে দিন আমি আবার কলেজে ঢুকে ড্রেস চেঞ্জ করে নিয়ে বাসায় চলে যাই।
পুরান ঢাকার একটা হোটেলে আমি আমার স্বপ্নকে হাতের নাগালে পেলাম। সেটাও কলেজ পালিয়ে। হোটেলটা চিনতো সুমন। আমার জন্য রাস্তা ঘাট সবই নতুন। একেবারে আনকোরা। এত ঘন চিপার ভিতরেও যে হোটেল থাকতে পারে আমি জানতাম না। রিক্সা থেকে নেমে আমরা অনেকটা পথ হেঁটে হোটেলের রুমে আসি। রুমটা পরিষ্কার-গুছানো। কিন্তু ৬০ওয়াটের বাল্ব জ্বালানো আর বন্ধ জানালার জন্য রুমটা অন্ধকার। একটা কাঠের চেয়ার।খাট আর সিলিংয়ে একটা ঝুলন্ত ফ্যান। ফ্যানটাতে বিকট শব্দ হচ্ছে। মনে হচ্ছে মাথায় ভেঙ্গে পড়বে। আমার কোন কিছুই বিরক্তিকর মনে হচ্ছে না। আমার দীর্ঘকালের স্বপ্নের বাস্তবতার সামনে দাঁড়ানো আমি। আমার ঘন ঘন নিশ্বাস। তার ঘন ঘন নিশ্বাস আর দুজন মানুষ একজন হওয়া ছায়াতে। সবকিছু আমার জন্য বিষাক্ত স্বপ্ন হয়ে গেলো।
৪.
হোটেল থেকে বের হওয়ার পর সুমন আমার সাথে কথা বলেনি। আমাকে এড়িয়ে যায়। আমি নিজেই জানতাম না আমার অসঙ্গতি। সুমন আমার প্রাক্তন প্রেমিক। আমার অসঙ্গতি আমাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দেয়। এসব কথা তার বন্ধুদের বলে বেড়ায়। সে সবাইকে হাসতে হাসতে বলেছে, “রুপুসিকইন্যার ভিতরে একটা ফাঁপা পাইপ”। সে নতুন প্রেমিকা খুঁজে নিয়েছে। আমার আকাঙ্খার কথা আমার প্রেমিক হয়েও সে বুঝলো না। আমার সেই থেকে কিছু মনে থাকে না।আসলে মনে রাখতে চাই না। আমি আমার প্রথম মিলন ভুলতে চাই। আমি কিছুই ভুলতে পারি না। সেই জড়িয়ে ধরা। প্রথম চুম্বন। সুমনের আমার স্তনে হাত রাখা। আমি কিছুই ভুলতে পারি না।আমি ভুলে যাই নিচের গেটের চাবি কোথায় রেখেছি! কোন বইটা পড়ছিলাম কিংবা আজকে গোসল করেছি কিনা। আমার মনে থাকে সেই হিংস্র নিশ্বাস। সেই হিংস্র ছায়া! যেখানে দুজন মানুষ একজন হয়ে যায়। আমি আরো ভুলতে পারি না আমার তৃতীয় লিঙ্গ হয়ে জন্ম হওয়াটা।