মোরশেদ আলম : ছিলেন আমাদের পৃষ্ঠপোষক। ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে তাঁর রয়েছে আর্থিক উদারতা। সদা হাস্যোজ্জ্বল এক মানুষ। সরল, সহজ ও বিনয়ী। ছিলেন নিভৃতচারী অথচ কৌতুকপ্রিয়। ভাগ্যপ্রসন্ন এক ব্যক্তি তিনি। দীর্ঘ সতের বছর থেকেছেন মদিনায়। নামাজ পড়েছেন মসজিদে নববীতে। তাঁর আচরণ ছিলো বৃক্ষের মতো—কোমল ও সবুজাভ। আমরা বলতাম মদিনার মানুষ। ধোকা খেয়েছেন, ক্ষমা করেছেন—ক্ষতি করেন নি কারও। তাঁর পরিবারের সাথে আমার সম্পর্ক এক যুগের। তাঁর সন্তানদের সময় দিয়েছি একজন শিক্ষক হিসেবে, বন্ধু হিসেবে, কখনো অভিভাবক হিসেবে। দীর্ঘ সময়ের দর্শন ও বিশ্লেষণ আমায় বলছে এতো সুন্দর ও আদর্শ পরিবার আমার চোঁখ আর দেখে নি। আমিও যথা সম্ভব দেয়ার চেষ্টা করেছি। কতটুকু পেরেছি বলতে পারবো না। ওরা বড় হলেই স্বার্থক হবো।
মাওলানা আকবর আলী রহ. সাহেবের উদাহরণ হচ্ছে বটবৃক্ষের মতো। ছায়া দিতে দিতেই যার জীবন শেষ! মাঝখানে অসুস্থ ছিলেন। শেষমেষ ফিরে আসলেন নীড়ে। মাত্র কিছুদিনের ব্যবধান। এর মধ্যেই মহাকালের ডাক! তিনি চলে গেলেন। রেখে গেলেন কিছু ফুটন্ত গোলাপ—তাঁর আদর্শে গড়া সন্তান। রায়হান ও তার বোনেরা। পিতার মৃত্যুকালে তাদের অবস্থা যদি দেখতেন!
তাদের পিতা পড়তেন প্রচুর। কথা বলতেন কম। প্রচলিত রাজনীতিতে ব্যাপক অনীহা থাকলেও ইসলামী আন্দোলনের কল্যাণকামী ছিলেন সর্বদা। ছেলে রায়হানকে নিয়েই তাঁর উচ্ছ্বাস ছিলো বেশি। সে ডাক্তার হয়ে সেবায় ব্রত নিয়ে কাজ করবে। অথচ তার ডাক্তার হওয়ার আগেই চলে গেলেন তিনি! ঢাকায় যাচ্ছিলেন চিকিৎসার জন্য। বললেন দ্রুতই ফিরছি। এই ফেরা যে তাঁর শেষ ফেরা হবে কে জানতো!
তাঁর মৃত্যু যেনো মেনে নেয়া যায় না। এ যেনো ভালো মানুষদের নিকৃষ্ট পৃথিবী ত্যাগ করে চলে যাওয়া। পারিবারিক ভাবে তিনি উসমানীনগরের গলমুকাপন-জটুকোণা গ্রামের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। মৌলভীবাজারের বহু আলেমের শিক্ষক হজরত মাওলানা সাইদুর রহমান মৌজুসী হুজুর তাঁর সম্মানিত শশুর। আল্লাহ তাঁর এই নেক বান্দাকে জান্নাতুল ফিরদৌস দান করুন। আমিন।