হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলির কথা বলছি। আপনি কি তার ভক্ত? পছন্দ করেন এই লাস্যময়ী অভিনেত্রীকে অনুকরণ করতে? নিজেকে ঠিক কতটা পরিবর্তন করতে পারবেন আপনি তার জন্য? প্রশ্নটা শুনে একটু হকচকিয়ে গেলেন? যাওয়াটাই স্বাভাবিক। তারকাদের আমরা অনেকেই ভালবাসি, অনুকরণ করি, তাদের ভক্ত হিসেবে দাবী করি নিজেদের। কিন্তু সেটারও নির্দিষ্ট একটি সীমা থাকে। আর এই ছোট্ট কথাটিই যেন ভুলে গিয়েছিলেন তেহরানের বাসিন্দা সাহার তাবার। ছোট্টবেলা থেকে নিজেকে ঠিক অ্যাঞ্জেলিনা জোলির মতন করে দেখতে চেয়েছিলেন সাহার। বাচ্চা মেয়েটির একমাত্র ইচ্ছে ছিল দেখতে একেবারে নিজের পছন্দের তারকাটির মতন হওয়া। তো, যেই কথা সেই কাজ! এক এক করে মোট ৫০ টি সার্জারি করিয়ে ফেলেন ১৯ বছর বয়সী এই মেয়েটি। শুধু অ্যাঞ্জেলিনা জোলির মতন হওয়ার জন্য। ফলাফল? কিছুদিন আগে হুট করে কিছু ছবি বেশ ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। ছবিগুলো সাহার তাবেরের। টানা ৫০ টি সার্জারি করার পর নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে সে। তারকাকে ভালবাসলেই যে ঠিক তার মতন চেহারার অধিকারী হতে হবে তা নয়- এই কথাটি এখন হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করতে পারছে এই কিশোরী। তবে সর্বনাশ যা হওয়ার তা এর মধ্যেই হয়ে গেছে। নাক, ঠোঁট, গাল, থুতনি, চোখ- সবকিছু জোলির মতন করতে গিয়ে নিজের মিষ্টি চেহারাটিকে বিদ্ঘুটে করে ফেলেছে সাহার। আর এই কাজে তাকে সাহায্য করেছে চিকিৎসকেরা। অবশ্য চিকিৎসকেরাই বা কী করতেন? সাহার চেয়েছিলো কয়েক মাসের মধ্যেই নিজেকে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি করে তুলতে। সার্জারিগুলোর ভেতরেও কোন সময় দেয়নি সে নিজের চেহারাকে নতুন রূপের সাথে মানিয়ে নিতে। চুপ করে থাকেনি মানুষ। ইন্সট্রাগ্রামে সাহার তাবেরের ছবি ভর্তি হয়ে গিয়েছে নেতিবাচক সব মন্তব্যে। তবে তাতে করে সাহার তাবের একটুও চিন্তিত না। যেটা হয়ে গেছে সেটা নিয়ে তো আর কিছু করা যাবে না। বর্তমানে প্রতিদিনই নিজের নতুন সব ছবি প্রকাশ করছে সে আর কুড়োচ্ছে সবার সহমর্মিতা আর বিরূপ মন্তব্য দুটোই! কেবল চেহারা নয়, নিজের চোখের মণির রঙ এবং চুল জোলির মতন করে তুলতেও বারবার লেন্স আর রঙ পরিবর্তন করছেন সাহার। সেইসাথে প্রচণ্ড ডায়েট করে ওজন থামিয়ে রেখেছেন ৪০ কেজিতেই! প্রচুর লাইক আর ফলোয়ার পেয়েছে সাহার এই কয়েকদিনে। তবে সেটাই কি সব? উঁহু, মোটেও নয়! আমাদের প্রত্যেকের বেঁচে থাকার জন্য ভিন্ন ভিন্ন পেশায় কাজ করতে হয়। তারকারাও ঠিক সেটাই করে থাকেন। তাদেরকে আমরা ভালোবাসি, অনুকরণ করি পাগলের মতন- হ্যাঁ, সেটা আমরা করতেই পারি। তবে সুন্দর কি কেবল তারকারাই? প্রত্যেকেরই নিজস্ব কিছু সৌন্দর্য আছে। নিজের সৌন্দর্যের মূল্য দিতে শিখুন। অন্যের মতন হতে গিয়ে অন্ধ হয়ে যাওয়াটা ভালবাসা নয় বোকামি। এতে করে আপনার আদর্শ মানুষটি অবাক এবং বিমোহিত নয় বিরক্ত হবেন। ঠিক যেমনটি হয়েছেন জোলি। নিজেকে ভালোবাসুন। তবেই না অন্য কাউকে ভালবাসতে পারবেন!
জোলি, নাকি জোম্বি? সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

Spread the love
Facebook Comments