কাউসার আহমদ সোহাইল
পরিচালক, দাবানাল শিল্পী গোষ্ঠী
আদর্শ শিল্পী হতে হলে আদর্শ মানুষ হতে হবে। আদর্শ মানুষ হতে হলে আদর্শ মুমিন হতে হবে। আমাদের সমাজে শিল্পীরা একটা মডেল। সমাজের দিকে তাকালেই তার প্রমাণ আমরা দেখতে পাই। পোশাক-পরিচ্ছেদে, চলনে-বলনে, মানুষ তাদেরকে অনুসরণ করে। শিল্পীরা অনুসরণীয় মানুষ, এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। কেবল কণ্ঠশিল্পী হয়ে সমাজে খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করা যায়না। ইসলামী সমাজ বিপ্লবের জন্য খাটি সাংস্কৃতিক কর্মী হওয়া চাই। এর জন্য আপনার আমার কোরবানি ও সদিচ্ছার প্রয়োজন। কিছু পাওয়ার জন্য নয় বরং জাতিকে কিছু দেয়ার মানুষিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে। এ জন্য আপনাকে আমাকে চিন্তা ফিকির ও চেষ্টা, সাধনায় লেগে থাকতে হবে।
মনে রাখতে হবে আমরা কন্ঠজীবি হতে চাইনা বরং আদর্শ সাংস্কৃতিক কর্মী হতে চাই। এ দেশের সকল ওলামায়ে কেরামের কাছে আমরা ইসলামী সাংস্কৃতিক কর্মীরা এখনো সমাদৃত হতে পারিনি। হযরত হাসসান বিন সাবেতের অনুসারী ইসলামী সাংস্কৃতিক কর্মীদেরকে আমরা এখনো সমাজে অনেক ক্ষেত্রে অবহেলা পরতে দেখি। এ অবহেলার বড় কারণ আমাদের আদর্শ শিল্পী হতে না পারা। আমাদের নামাজ কাযা হয়ে যায়। কথা কাজের অমিল। কাজকর্মে আমাদের ইখলাছের অভাব। পরিমার্জিত ব্যক্তিত্বের অভাব।এ জন্য আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। পরিকল্পিতভাবে নিজেকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি অযথা কর্ম থেকে বিরত থাকতে হবে। মোবাইলের অপব্যবহার রোধ করতে হবে।
দাবানল শিল্পীগোষ্ঠীর ২দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত
আধুনিক গবেষকরা এর বিরুপ প্রভাবকে মাদকের চেয়ে ভয়ংকর বলেছেন। ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভারসিটির একদল গবেষক সোস্যাল মিডিয়াকে ডিজিটাল কোকেন বা হিরোইন বলে আখ্যায়িত করেছেন। নেশাখোর লোক যেমন স্বাভাবিক কাজ-কর্মে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে, তেমনি মোবাইল আসক্তদের থেকেও কাজ-কর্মে স্বাভাবিক ভারসাম্য হারিয়ে যায়। কর্মে স্পৃহা নষ্ট হয়ে যায়। এই ক্ষতি থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে রুটিন মেনে মোবাইল ব্যবহার করেতে হবে এবং অশ্লীলতা থেকে সযত্নে বেচে থাকতে হবে। এজন্য নির্দিষ্ট লক্ষে সময় নির্ধারণ করে ইন্টারনেটে প্রবেশ করতে হবে।পালহীন নৌকার মত সেখানে দোল খেয়ে চললে বিপদের পরার আশংকা প্রবল। কুরআনের ভাষ্যমতে : নির্বোধ লোকেরা শিল্পীদের অনুসরণ করে। তারা এমন কথা বলে যা তারা নিজেরাই পালন করেনা।
মনে রাখবেন, যেটা হৃদয় থেকে বের হয় সেটা আরেকটা হৃদয়কে স্পর্শ করে। অতএব, কথা কাজে মিল থাকাটা একজন আদর্শ শিল্পীর একটি বড় গুণ। পোশাক-পরিচ্ছেদে পরিপাটি থাকবেন। কারণ আপনি সমাজের একশত জনের মধ্যে বিশেষ একজন। নিয়তে শুদ্ধতা বজায় রাখতে হবে। কাজের ফায়দা লাভের জন্য তাহজিরে নিয়ত (নিয়তের উপস্থিতি) শর্ত।এ কাজকে ইবাদতের নিয়তে করতে হবে।নিছক টাকার জন্য এ লাইলে আসলে সাময়িক কন্ঠজীবি হওয়া সম্ভব হলেও আদর্শ শিল্পী হওয়া যাবেনা। প্রত্যেকের জন্য রিজিক বরাদ্দ। এ কথা মনে প্রানে একীন করতে হবে। তাহলে অন্তরে প্রশান্তি বজায় থাকবে। মনে রাখবেন আমরা হাসসান বিন সাবিতের অনুসারী। আমাদের কাজটা ইবাদত। এ মেহনতের বিনিময় আমরা আখিরাতে আশাকরি। ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ রহ. জীবন থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহন করতে হবে। তিনি খেলাফত লাভের পূর্বে ছিলেন মহা বিলাসী প্রকৃতির মানুষ। অথচ খেলাফত লাভের পর একেবারে সাদামাটা জীবনযাপন বেছে নেন।তিনি বিশ্বাস করতেন,খেলাফতের এ দায়িত্ব পালন এটা আমার ইবাদত।এর বিনিময় আমি আখেরাতে পাবো।দুনিয়ার সকল নাজ নেয়ামত মহা নেয়ামত জান্নাতের তুলনায় অতি তুচ্ছ বস্তু। অতএব, আমাদেরকে নির্লোভ হতে হবো।
অনুলিখন : আরিফুল ইসলাম বাদল